ওই আস্তাবলের মাথায় যে আকাশটা, ওরই ওপারে পুবদিকে বহুদুরে তাহাদের নিশ্চিন্দিপুর।
আজ কতোদিন সে নিশ্চিন্দিপুর দেখে নাই – তি-ন বতসর! কতকাল!
সে জানে নিশ্চিন্দিপুর তাহাকে দিনে-রাতে সবসময় ডাকে, শাঁখারীপুকুর ডাক দেয়, বাঁশবনটা ডাক দেয়, সোনাডাঙ্গার মাঠ ডাক দেয়, কদমতলার সাহেবের ঘাট ডাক দেয়, দেবী বিশালাক্ষী ডাক দেন।
………
এতদিনে তাহাদের সেখানে ইছামতীতে বর্ষার ঢল নামিয়াছে। ঘাটের পথে শিমুলতলায় জল উঠিয়াছে। ঝোপে ঝোপে নাটাকাঁটা, বনকলমির ফুল ধরিয়াছে। বন অপরাজিতার নীল ফুলে বনের মাথা ছাওয়া।
…………………
বনের ধারে সে অপূর্ব মায়াময় বৈকালগুলি মিছামিছিই নামিবে চিরদিন।
…………………
(বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের “পথের পাঁচালী” হতে নেওয়া)