লাইফ ইজ এ গেইম অফ ইঞ্চেস


১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া “এনি গিভেন সানডে” তে আল পাচিনো একটা ফুটবল দলের কোচ এর চরিত্রে অভিনয় করেন। ফাইনাল খেলার আগে কোচ হিসেবে তিনি একটি অসাধারণ বক্তৃতা দেন। সেই বক্তৃতাটি যেকোনো প্রতিযোগিতার জন্যে প্রচন্ড অনুপ্রেরণামূলক। হয়তো আমাদের ক্রিকেট দলকে এই বক্তৃতার ভিডিওটি দেখানো উচিৎ!
মূল ইংরেজীটি পাওয়া যাবে এখানে
ইউটিউব ভিডিওঃ

ইউটিউবে ভিডিওটি দেখলে বুঝা যাবে তাঁর এক বক্তৃতায় খেলোয়াড়রা কিভাবে জেতার জন্যে পাগল হয়ে উঠে!

=============================

আমি আসলেই জানিনা কী বলবো।
আর মাত্র তিন মিনিট পরেই আমাদের খেলোয়াড় জীবনের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ শুরু হচ্ছে।
হয় আমরা সবাই টিম হিসেবে জয়ী হবো, অথবা প্রতিপক্ষ আমাদের ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে –
ইঞ্চি ইঞ্চি করে, কৌশলের মাধ্যমে ওরা আমাদের ধূলোয় মিশিয়ে দিবে।
বিশ্বাস করো, আমরা এই মুহুর্তে একটা নরকে আছি।
এখন আমরা প্রতিপক্ষের মার খেয়ে খেয়ে এই নরকে আটকা পড়ে থাকতে পারি, অথবা –
আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে যুদ্ধ করে এখান থেকে বের হয়ে যেতে পারি।
একটু একটু করে, ইঞ্চি ইঞ্চি করে এগিয়ে যেয়ে।

এখন কথা হচ্ছে, আমি তোমাদের জন্যে এই যুদ্ধটা করে দিতে পারবো না।
আমার অনেক বয়স হয়ে গেছে।
চারদিকে তাকিয়ে এতো তরুণ বয়সীদের দেখে আমি বুঝতে পারি আমি জীবনে কতো ভুল করেছি –
আমি আমার সব টাকাকড়ি নষ্ট করেছি এবং আপনজনদের দূরে ঠেলে দিয়েছি।
এবং ইদানিং আয়নার সামনে দাঁড়ালে যে মানুষটিকে আমি দেখতে পাই তাকে কেনো যেনো সহ্য করতে পারিনা।
আসলে যখন তুমি বুড়ো হতে শুরু করো তখন তোমার জীবন থেকে অনেক কিছু হারিয়ে যায়।
কিন্তু বুড়ো হবার আগে এই জিনিসটা তেমন চোখে পড়েনা।

একসময় তুমি বুঝতে পারো জীবনটা হচ্ছে একটা ইঞ্চির খেলা।
এবং ফুটবলও তাই।
কারণ, ফুটবল কিংবা জীবন, দুটোতেই ভুল করার সুযোগ খুবই কম।
ফুটবলে তুমি বলের কাছে আধা কদম আগে বা পরে আসলে বলটা মিস করে ফেলো।
আধা সেকেন্ড আগে বা পরে পৌঁছালে প্রতিপক্ষের পায়ে চলে যায় তোমার বল।
এই যে একটুর জন্যে, এক বা আধা ইঞ্চির জন্যে হেরে যাওয়া, এটা জীবনের সবক্ষেত্রে সত্যি।
পুরো খেলাজুড়ে, প্রতিটি সেকেন্ড জুড়ে এই ইঞ্চির ব্যাপারে তোমাকে সচেতন থাকতে হবে।

আজকের এই খেলায়, আমরা আমাদের টিম নিয়ে এই এক ইঞ্চির জন্যে যুদ্ধ করবো।
এই ইঞ্চির জন্যে আমরা আমাদের প্রতিপক্ষকে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলবো।
আমরা আমাদের হাতের থাবা এবং বজ্রমুষ্টি শক্ত করে সেই ইঞ্চি ছিনিয়ে নেবো।
কারণ আমরা জানি – এই ইঞ্চিগুলোর সমষ্টিই নির্ধারণ করবে জয় পরাজয়।
এই ইঞ্চিগুলোই নির্ধারণ করবে কে বাঁচবে কে মরবে।

শুনো –
যেকোনো যুদ্ধে এই ইঞ্চি সেই পাবে যে এটা পাওয়ার জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত।
এবং আমি জানি, আমি বেঁচে থাকতে চাই এই জন্যে যে আমি সেই ইঞ্চির জন্যে যুদ্ধ করতে এবং জীবন দিতে প্রস্তুত।
কারণ এটাকেই বলে সত্যিকারের বেঁচে থাকা।

কথা হচ্ছে, আমি তোমাদের জোর করে এই যুদ্ধ করাতে পারবো না।
তোমাকে তোমার চারদিকে তাকাতে হবে।
তোমার টিমমেটদের চোখের মধ্যে যুদ্ধে জয়ী হবার আগুন দেখতে হবে।
আর এটা তখুনি দেখবা যখন তোমার টিমমেটরা তোমার মধ্যে সেই আগুন দেখতে পায়।
এবং এটাকেই বলে সত্যিকারের টিম।
অতএব, আমরা হয় একটা টিম হিসেবে আজকের খেলায় জয়ী হবো, অথবা –
আমরা প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে পরাজয়ের লজ্জায় ডুবে মরবো।
আর এটাই হচ্ছে ফুটবল।

এখন বলো – তোমরা কী জয়ের জন্যে জীবন দিতে প্রস্তুত?

2 thoughts on “লাইফ ইজ এ গেইম অফ ইঞ্চেস

  1. সত্যিই দারুণ!! ধন্যবাদ বিলাস ভাইয়া…
    এতদিন পর ব্লগ লিখলেন!!
    কোন খবর নাই! সেই কবে একবার আমার ব্লগে ঢুঁ মারলেন… তারপর থেকে আপনার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছিলাম। আপনারা ভালো আছেন তো? 🙂

    অনেক অনেক শুভকামনা…

  2. bilash says:

    ধন্যবাদ মাহমুদ! ব্লগে ঘোরার সময়ই পাইনা। আশা করি নেক্সট টাইম ঢুঁ মারবোঃ)

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s

%d bloggers like this: